দৈনিক সময়ের ডাক ডেস্ক :
শাহবাগে ফ্যাসিবাদের উত্থান, শাহবাগেই ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। শনিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দলটির কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পরবর্তী সরকারি কার্যদিবসে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। রাতে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহম্মদ ইউনূসের সরকারি বাসভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়াও রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচারে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধনী উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে ‘উপদেষ্টা পরিষদের বিবৃতি’ আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের পড়ে শোনান।
বিবৃতিতে বলা হয়, আজ শনিবার ১০ মে ২০২৫ তারিখে উপদেষ্টা পরিষদের এক বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধনী অনুমোদিত হয়েছে। সংশোধনী অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল কোনও রাজনৈতিক দল, তার অঙ্গসংগঠন বা সমর্থক গোষ্ঠীকে শাস্তি দিতে পারবে।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের বিচার কার্যসম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদি ও সাক্ষীদের সুরক্ষার জন্য সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে সাইবার স্পেসসহ আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরিপত্র পরবর্তী কর্মদিবসে জারি করা হবে।
এর পাশাপাশি, আজকের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে জুলাই ঘোষণাপত্র আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত করে প্রকাশ করার সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়েছে।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ইস্যুকে কেন্দ্র করে ২০১৩ সালে আলোচিত ও সমালোচিত শাহবাগ আন্দোলন গড়ে উঠেছিল। ‘যুদ্ধাপরাধের বিচারের রায় পাল্টে দিতে’ কথিত জনমত গড়ে তুলতে ওই আন্দোলন গড়ে উঠেছিল। ওই সময় পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকার ওই আন্দোলনে জনবল, রসদ দিয়ে প্রত্যক্ষ সহায়তা করেছিল। কোন সরকার যে নিজেই ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠতে পারে তার সরাসরি নজির ছিল ওই কথিত শাহবাগী আন্দোলন।
এ দিকে শাহাবাগীদের ওই আন্দোলনের জেরে শেখ হাসিনার সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সংশোধন করে সরকার পক্ষের আপিল করার বিধান যুক্ত করা হয়।