উজ্জ্বল কুমার সরকার, নওগাঁ প্রতিনিধি :
নওগাঁর মহাদেবপুরে যৌতুকের দাবীতে হাত-পা বেঁধে শারীরিক নির্যাতনের পর ঘরে আটকে রেখে এক গৃহবধুর মাথার চুল কেটে নেয়ার অভিযোগ স্বামীর বিরুদ্ধে। পুলিশ ওই গৃহবধুর স্বামী মিনহাজ হোসেনকে আটক করে মঙ্গলবার (১০ জুন) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। ঘটনাটি ঘটেছে ঈদের পরের দিন গত রোববার বিকালে উপজেলার শিবরামপুর দক্ষিণপাড়ায়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানায়, প্রায় ৪ বছর পূর্বে একই গ্রামের হারুন অর রশিদের মেয়ে হেরা খানমের (২০) সাথে জিয়াউল হকের ছেলে মিনহাজ হোসেনের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে আড়াই বছরের একটি সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকলোভী মিনহাজ যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন করে আসছিল। ঈদের পরের দিন রোববার বিকেলে আবারও যৌতুকের দাবীতে স্ত্রী হেরা খাতুনকে হাত-পা বেঁধে ঘরে আটকে রেখে মারপিট করতে থাকে। মারপিটের একপর্যায়ে কাঁচি দিয়ে তার মাথার চুল কেটে নাড়া করে দেয়। পরে তার হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ঘরে আটকে রেখে পালিয়ে যায় স্বামী মিনহাজ। সন্ধ্যার দিকে তার চেঁচামেচিতে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে দেয়। খবর পেয়ে পরদিন সোমবার বিকেলে হেরার বাবা-মা ঢাকা থেকে এসে মেয়ের চিকিৎসা করান। গৃহবধু হেরার বাবা হারুন জানান, অভাবের সংসারে পেটের দায়ে ঢাকায় রিকসা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। ঈদের বাড়ি আসতে পারেননি তারা। মেয়েকে নির্যাতনের খবর পেয়ে সোমবার বিকেলে ঢাকা থেকে এসে মেয়ের চিকিৎসা করান। তার মেয়ে এখনও হাসপাতালে চিৎিসাধীন রয়েছেন। তিনি আরও জানান, বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবীতে জামাই মিনহাজ তার মেয়েকে নির্যাতন করে আসছে। রবিবার বিকেলে আবারও যৌতুকের দাবীতে হাত-পা বেঁধে মারপিট করে ৩-৪ ঘন্টা ঘরে আটকে রেখে মাথার চুল কেটে নাড়া করে দিয়েছে। জামাই মিনহাজ এর আগে তাকে এবং তার স্ত্রীকেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতসহ বিভিন্ন সময়ে মারপিট করেছে। এ ঘটনায় হারুন অর রশিদ বাদী হয়ে মিনহাজ হোসেনকে আসামী করে মহাদেবপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন। মহাদেবপুর থানার (ওসি) মো. শাহীন রেজা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, গ্রেপ্তার আসামী মিনহাজকে আটক করে মঙ্গলবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।