রাসেদুল ইসলাম, স্টাফ রিপোর্টার:
ফাল্গুন আসতেই পল্লীকবি জসীম উদ্দিনের ‘মামার বাড়ি’ কবিতার পংক্তিগুলো বাস্তবে রূপ পেতে শুরু করে, যদিও পরিপক্ব হতে কিছুটা সময় লাগে।
তবে সুখের ঘ্রাণ বইতে শুরু করেছে।গাছে গাছে ফুটছে আমের মুকুল। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে এই মুকুলের পাগল করা ঘ্রাণ।
বাতাসে মিশে সৃষ্টি করছে মৌ মৌ গন্ধ। যে গন্ধ মানুষের মন ও প্রাণকে বিমোহিত করে।
পাশাপাশি মধুমাসের আগমনী বার্তা শোনাচ্ছে আমের মুকুল।
রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ আমের জন্য বিখ্যাত। কিন্তু সময় অনেকটা পাল্টে গেছে। এখন এই তালিকায় বগুড়া সহ বেশ কিছু জেলা নিজের স্থান করে নিয়েছে। রাজশাহী আমের জন্য বিখ্যাত তা ছোট বেলা হতে শুনে আসছি। জেলার বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ হচ্ছে নানা জাতের আম। লাভজনক হওয়ায় প্রতিবছরই আম চাষের বাগান বাড়ছে।
রাজশাহী জেলার মোহনপুর উপজেলার বেশ কয়েকটি আম চাষের সঙ্গে যুক্ত বাগান মালিকদের সঙ্গে কথা হলে এসব তথ্য জানা গেছে।
সরেজমিনে হাটরা বাগানে দেখা যায়, আম বাগানের সারি সারি গাছে শোভা পাচ্ছে মুকুল। এ যেন হলুদ আর সবুজের মহামিলন। মুকুলে ছেয়ে আছে গাছের প্রতিটি ডালপালা। চারদিকে ছড়াচ্ছে সেই মুকুলের সুবাসিত পাগল করা ঘ্রাণ। তবে আমের ফলন নির্ভর করছে আবহাওয়ার ওপর। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন বাগান মালিকরা।
এদিকে মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মুকুলে ভরে গেছে বাগানসহ ব্যক্তি উদ্যোগে লাগানো আম গাছগুলোতে। তবে বড় আকারের চেয়ে ছোট ও মাঝারি আকারের গাছে বেশি মুকুল ফুটেছে। সেই মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে বাগান মালিকদের চোখে ভাসছে স্বপ্ন।
বাগান মালিক সারোয়ার বলেন, তিনি তার বাগানে বিভিন্ন জাতের আম গাছ লাগিয়েছেন। এর মধ্যে আম্রপালি, গোপালভোগ, ল্যাংড়া, ফজলি, ক্ষিরসাপাতি, বারি-৪, হাড়িভাঙা অন্যতম। ইতোমধ্যে এসব গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। গাছের পুরো মুকুল ফুটতে আরো কয়েক সপ্তাহ লাগবে বলে তিনি জানান।
বাগান মালিক মুরশেদুল জানান, প্রায় এক সপ্তাহ আগে থেকে তাদের বাগানে আম গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। বেশিরভাগ গাছ মুকুলে ছেয়ে গেছে। কিছু গাছে গাছে মুকুল বের হচ্ছে।
তারা আরও জানান, মুকুল আসার পর থেকেই তারা গাছের প্রাথমিক পরিচর্যা শুরু করেছেন। মুকুল রোগবালাইয়ের আক্রমন থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ওষুধ স্প্রে করছেন তারা।
বাগান মালিকরা জানান, বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। এ অবস্থা থাকলে এবার আমের বাম্পার ফলন বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।
মোহনপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কামরুল ইসলাম বলেন, এবারের আবহাওয়া অত্যন্ত ভাল। যা আমের বাম্পার ফলনের জন্য উপযোগী বর্তমানে ৪২০ হেক্টর জমিতে আম চাষের হচ্ছে, হেক্টর প্রতি ১৩ টন আম উৎপাদন হবে আশা করছি । তবে সবকিছুই প্রকৃতির ওপর নির্ভর করছে।