সময়ের ডাক নিউজ ডেস্ক :
ফসলি জমি থেকে কাটা হচ্ছে মাটি। সেই মাটি বিভিন্ন জায়গায় বেশী দামে বিক্রি করছে। ২০ থেকে ২৫ ফুট গভীর করে মাটি কাটার ফলে আশপাশের কৃষি জমিও ভেঙে পড়ছে। এ ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছেন গাজীপুরের বাসন থানাধীন ১৪ নং ওয়ার্ডের বাসন, ইসলাপুর মহল্লার কৃষকরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জমিতে এই মৌসুমে ধান আবাদ করে থাকে। কৃষকদের অনেকেই তাদের জমিতে করেছে ধানের চারা। তারই মাঝে ২০ থেকে ২৫ ফুট গভীর করে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন জায়গায় ড্রাম ট্রাক দিয়ে। এতে করে পরিবেশ যেমন নষ্ট হচ্ছে তেমনি মাটির ট্রাক চলাচল করায় রাস্তাঘাটও নষ্ট হচ্ছে।
ভূমি মালিক ও কৃষকরা জানান, এলাকার বেশির ভাগ কৃষক এবং জমির মালিকরা কেউ নিজে কেউবা বর্গা দিয়ে ধান রোপণ করেছে। তবে কিছু জমির মালিকরা নানা কারণে এ বছর চাষাবাদ করতে পারেনি। উপজেলার সাজনধরা এলাকার কন্ট্রাক্টর হাফিজ ও বাসন থানা ১৪ নং ওয়ার্ড শ্রমিক দলের (সভাপতি) ইউসুফ, নাছির দেওয়ান ও লিটন মাষ্টার প্রভাব খাটিয়ে সেই পতিত জমি থেকে কিছুদিন ধরে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। জমির কয়েকজন মালিককে কিছু টাকা দিলেও অনেককে না জানিয়েই নির্বিচারে মাটি কাটছে। ভেকু লাগিয়ে অবাধে মাটি কেটে বিক্রি করছেন। প্রথমত সন্ধ্যার পর থেকেই মাটিকাটা শুরু হতো এখন দিনের বেলায়ও মাটি কাটছে। গভীর রাত পর্যন্ত মাটি কাটার পর তা নিয়ে যাওয়া হয় পার্শ্ববর্তী এলাকায়। এখন দিনের বেলাতেও মাটি কেটে গর্ত করা হচ্ছে। এতে মাটি ব্যবসায়ীদের লাভ হলেও কমে যাচ্ছে উর্বর আবাদি জমি। ফলে কমছে খাদ্য উৎপাদন। অন্য দিকে মাটি বহনকারী ড্রাম ট্রাকের দাপটে রাস্তাঘাটেরও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
ইসলামপুর ভাঙ্গাব্রীজ এলাকার এক কৃষক দৈনিক সময়ের ডাক’কে বলেন, যারা মাটি কাটছে তারা নাকি বিএনপির অনেক বড় নেতা। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে জোড় করেই মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। আমার চাচার জায়গা থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। বাড়িতে গিয়ে চাচাকে বলার পর তিনি বলেন, সে নাকি জানেই না তার জমি থেকে মাটি কাটার বিষয়ে।
ঐ এলাকার আরেক কৃষক বলেন, অনেক না করছি ওরা তো আমাদের কথা শুনেই না। আমরাও ভয়ের লাইগা কিছুই কই না। জমিগুলার মাটি কাইটা সর্বনাশ কইরা ফালাইছে। আপনারা কিছু একটা করেন।
এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, দিন রাত মাটি বাহি ড্রাম ট্রাক চলাচলের কারণে আশপাশের প্রায় সব রাস্তাঘাট নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ধুলাবালির কারণে মানুষ চলাচল করতে পারছে না।
এরই মধ্যে পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে সড়কটির বিভিন্ন স্থান ভেঙ্গে চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে গেছে। স্থানীয় অনেকেই প্রতিবাদ করলে তাদের নানা ভাবে ভয়ভীতি দেখানো হয় বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। জমি থেকে মাটি কেটে নেওয়ায় পাশের মালিকরা ক্ষতির আশঙ্কায় তাদের কাছে মাটি ও জমি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। মাটি ব্যবসায়ীদের দাপটে এলাকায় কেউ কোনো কথা বলতে সাহস পায় না। মাটির গর্তের কাছে একটি ভেকু (মাটি খনন যন্ত্র) মেরামত করছেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাটি খেঁকো হাফিজ ও বাসন থানা ১৪ নং ওয়ার্ড শ্রমিক দলের (সভাপতি) ইউসুফ, নাছির দেওয়ান ও লিটন মাষ্টার সহ আরও কয়েকজন এই মাটির ব্যবসা করছেন।